শনিবার, ৮ মে, ২০২১

জাপানঃনারীবাদ ধ্বংস করছে যাদের!

 জাপানের পুরুষেরা এখন জৈবিক চাহিদা মেটানোর জন্য সেক্স ডলের শরণাপন্ন হচ্ছে। প্রতি বছর দেশটিতে প্রায় দুই হাজারের মতো 'সেক্স ডল' বিক্রি হয়, দাম অন্তত ছয় হাজার ডলার।


৪৫ বছর বয়সী মাসায়ুকি ওজাকি তার সেক্স ডল সম্পর্কে বলেন,

"সে সবসময় জেগে আছে, আমার জন্য অপেক্ষায় আছে এটা মনে করে আমি নিরাপদ বোধ করি.."


পাগলের প্রলাপ মনে হচ্ছে? 

বিয়ে না করে সেক্স ডলের ভালোবাসায় মজে যাওয়ার কারণ কি?

তাহলে কি জাপানের পুরুষরা Mass Schizophrenia বা Mass Paraphilia তে আক্রান্ত হচ্ছে?


চলুন মাসায়ুকি ওজাকির মুখ থেকেই শুনি,


"জাপানি মেয়েরা নির্মম হৃদয়ের, স্বার্থপর। পুরুষেরা চায় এমন কেউ তার পাশে থাকুক যে তার পাশে থাকুক, কাজ থেকে আসার পর যার সাথে সুন্দর সময় কাটানো যায় এমন কেউ। সেক্স ডলের সাথে আমি তেমনটা করতে পারি"। [1]


ঠিক ধরেছেন। দেশটিতে নারীবাদের কালো থাবা পড়েছে। ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজড দেশটির কর্পোরেট নারীরা আর বিয়ে করতে আগ্রহী নয়। বিয়ে করলে বাচ্চা হবে, কাজের ক্ষতি হবে। আর বৈবাহিক জীবনে সময় দিতে গিয়ে ক্যারিয়ারও ঠিকমতন হবেনা। আর ওদিকে পুরুষ তো এগিয়ে যাচ্ছে, কাজেই তাকেও ধরতে হবে। সুতরাং , জাপানী নারীদের সহজ সমাধান হল: নো বিয়ে, নো বাচ্চা, অনলি ক্যারিয়ার। ক্যারিয়ার গড়তে গড়তে ৩৫ বছর, কাজেই পরে আর বিয়ের বয়সও নেই। কাজেই কোন বিয়ে না করেই জীবন পার করে দিচ্ছেন জাপানী নারীরা। জনসংখ্যার বিশাল অংশ।


এর ফল জাপানকে বেশ ভালোভাবেই ভোগ করতে হচ্ছে।


নারীরা বাচ্চা নিতে অনাগ্রহী হওয়ায় জাপান এখন জনসংখ্যার সমস্যায় ভুগছে। জাপানে এখন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৩৩%। বুড়োদের দিয়ে ভরে গেছে দেশটা। সেখানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এখন শুন্যের নিচে নেমে গেছে, -০.২%! [2] এভাবে চলতে থাকলে একসময় জাপানি জাতিটাই পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।


তার উপর বিয়ে না করায় জাপানে পরিবার গঠন হচ্ছে না। ফ্যামিলি লাইফ না থাকায় হতাশায় ভুগছে সেখানকার মানুষ। ফলে আত্মহত্যার হার বৃদ্ধি পেয়ে মহামারী আকার ধারণ করেছে। [3]


জাপানের চোখ ধাঁধানো ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের জিডিপি দেখে তাদেরকে সুখী ভাবার কোনো কারণ নেই। কারণ নারীবাদ দেশটিকে ভেতর থেকে ধ্বংস


করে দিয়েছে। 


That's why, feminism is toxic!


References :

[1] https://www.bbc.com/bengali/news-40473138

[2] https://www.statista.com/statistics/270074/population-growth-in-japan/

[3] https://en.m.wikipedia.org/wiki/Suicide_in_Japan



শুক্রবার, ৭ মে, ২০২১

ধার্মিক সেজো না, ধার্মিক হও!!


 ধার্মিক সেজো না, ধার্মিক হও 🤲

জাপানে রাস্তার মোড়ে মোড়ে কোনো মসজিদ নেই, রাত জেগে ওয়াজ নেই, নসিহত নেই, ধর্মীয় স্কলার নেই, মাজার নেই, ওরশ নেই, পীর নেই, মুরিদ নেই, কুতুব নেই, তাবলীগ নেই, আমরা শ্রেষ্ঠ জাতি বলেও কোনো বাগাড়ম্বর নেই। এগুলো ছাড়াই জাপান একটা সুশৃঙ্খল জাতি।


গত ত্রিশ বছরের মধ্যে কোনো দূর্নীতি নেই, কোনো ঘুষ নেই, কোনো ধর্ষণ নেই, স্কুলে কোনো ছাত্রকে বেত্রাঘাতের রেকর্ড নেই। কোনো কাজের জন্য কোনো ফাইল আটকে পড়ার নজির নেই। কারো সুপারিশ ছাড়া কোনো ছাত্র স্কুলে ভর্তি হতে পারছেনা, কারো প্রমোশন হচ্ছেনা- এমন দৃষ্টান্তও নেই। দলীয় ভাবে জাপানের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষকের নিয়োগের নজিরও নেই। রাস্তায় পড়ে থাকা বুভুক্ষু মানুষও নেই। আছে শুধু কর্মনিষ্ঠা, শৃঙখলা। 


ভূমিকম্পের সময় সব খাবার ক্যাম্পে রেখে দেয়া হয়েছিলো। নিজের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কেউ একটা রুটিও নিয়ে যায়নি। ত্রান কেন্দ্রে একজন প্রহরীকেও পাহারাদার রাখতে হয়নি। লাইন দাঁড়িয়ে সবাই যার যার মতো প্রয়োজনীয় খাবার নিয়ে গেছে। লাইন দাঁড়ানো শেষ ছেলেটির হাতে খাবার প্যাকেট দেয়ায় -সে সেই প্যাকেট আবার লাইনের সামনে রেখে এসেছে। যদি তার সামনে দাঁড়ানো কারো খাবার কম পড়ে যায়। 

জাপানে কোনো কালো বাজারি দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে মানুষকে জিম্মি করেনা। কেউ খাবারে ভেজাল মেশায় না। রাস্তাঘাট গুলো এতো ঝকঝকে পরিষ্কার। নিজের চেহারা রাস্তায় দেখা যায়। শুধু বয়স্ক কিংবা যুবকরা না একজন শিশুও জাপানের রাস্তায় যেখানে সেখানে ময়লা ফেলে রাখেনা। কোনো প্রোগ্রাম এক মিনিট দেরিতে শুরু হয় না। এক মিনিট ট্রেন লেট করেছিলো বলে - পত্রিকার পাতায় ক্ষমা চাওয়া হয়েছিলো। 


টেকনোলজি আর ডেভেলপমেন্টে জাপান পৃথিবী থেকে দশ বছর এগিয়ে আছে। পুরো পৃথিবীর খাবার ফুরিয়ে গেলেও জাপানে আগামি ত্রিশ বছরের জন্য খাবার মজুদ আছে। বোমায় কয়লা হয়ে যাওয়া জাপান পুরো দুনিয়ার গাড়ীর বাজারে নেতৃত্ব দিচ্ছে। অথচ, জাপানে ভার্চুয়ালি কোনো ন্যাচারাল রিসোর্স বলতে কিছুই নেই। 


জাপানের মানুষের মাঝে আছে শুধু বিনয় আর বিনয়। আর ক্ষমা প্রার্থনা। অবসরে যাওয়া জাপানি প্রধানমন্ত্রী বারবার বলছেন- কি করতে পেরেছি তার জন্য দয়া করে গুণ কীর্তন করবেন না। বরং যা করতে পারিনি সেটার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি। দু হাত একসাথে করে- জনগনের সামনে মাথা নীচু করে (যেটা জাপানি কালচার) বারবার ক্ষমা চাচ্ছিলেন জাপানের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী সিনজো আবে। 


রোজার মাস চলে এসেছে দেখবেন রোজার আগমনে অন্যান্য মুসলিম দুনিয়া শান্ত হয়ে আসছে। মানুষের মাঝে একটা ভাবগম্ভীর পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশে শুরু হবে কেনা কাটার মচ্ছব। যার দুই কেজি পিঁয়াজ দরকার সে কিনবে বিশ কেজি। যার এক কেজি চিনি দরকার সে কিনবে দশ কেজি। এমন করে খাবার মজুদ করা শুরু হবে যেন সারা বছর না খেয়ে ছিলো। রোজার পরও আর কোনোদিন খাবার খাবোনা। দুনিয়ার সব খাবার এই ত্রিশ দিনেই খেয়ে শেষ করতে হবে। এই সুযোগে পবিত্র রমজানের ব্যানার টাঙ্গিয়ে দ্রব্য মূল্যের দাম বাড়িয়ে ব্যবসায়ীরাও অপবিত্র কাজ করা শুরু করে দিবে। 


আমাদের মোড়ে মোড়ে এতো এতো মসজিদ, মাঠে মাঠে এতো ওয়াজ, গলিতে গলিতে এতো মাজার হওয়ার পরও পরিবর্তন হচ্ছে না কেন? ধর্মের দোষ দিচ্ছিনা, মসজিদেরও না, মাজারেরও না। শুধু আত্মসমালোচনা করছি।

বৃহস্পতিবার, ৬ মে, ২০২১

প্রবাসীদের রেমিটেন্স কোথায় খরচ হয়?

 প্রবাসীদের রেমিটেন্স কোথায় খরচ হয়?



বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থাকে প্রতিটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাউন্টে। সাধারণত আমদানি রপ্তানির জন্য মুদ্রার বিনিময় হয়ে থাকে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন মুদ্রা। তাই সকল দেশ একটি স্বতন্ত্র মুদ্রা ব্যবহার করে আমদানি রপ্তানির দায় মেটানোর জন্য। এজন্য সবাই মার্কিন ডলার ব্যবহার করে। 


মূল কথা হচ্ছে কীভাবে বিদেশে থাকা প্রবাসীদের টাকা তাদের পরিবারের কাছে পৌঁছায়। প্রথমে বিদেশে থাকা প্রবাসীরা সেই দেশের মুদ্রায় তাদের বেতন পায়। যেমন সৌদি আরব থাকলে রিয়াল পায়। সেই রিয়াল তারা সেই দেশের ব্যাংকে জমা দেয়। সেই ব্যাংক রিয়ালকে ডলারে রুপান্তরিত করে প্রবাসীদের দেশের নির্দিষ্ট ব্যাংক হিসেবে পাঠায়।


 সুতরাং আমাদের দেশের ব্যাংকে জমা হয় মার্কিন ডলার। কিন্তু প্রবাসীদের পরিবারের দরকার হচ্ছে টাকা। কারণ দেশে টাকা চলে ডলার নয়। তখন দেশীয় ব্যাংক সেই ডলার নিয়ে যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে। যেমন বাংলাদেশ ব্যাংক। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকের শুধু ক্ষমতা আছে ডলার ক্রয় করে টাকা দেওয়ার।


 ধরা যাক সোনালী ব্যাংকের কাছে প্রবাসীদের ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স এসেছে। সোনালী ব্যাংক সেই এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জমা দিয়ে ডলার অনুপাতে ৮৫০০ কোটি টাকা এনে সেগুলো প্রবাসীদের পরিবারের কাছে পরিশোধ করবে। 


ঠিক তখনই বাংলাদেশ ব্যাংকের একাউন্টে রিজার্ভ এর পরিমাণ ১ বিলিয়ন ডলার বাড়বে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক যে ডলার রেখে টাকা দিচ্ছে তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা কোথায় পায়?? বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপায়। এই ক্ষমতা শুধু তারই আছে। সেই ছাপানো টাকা দিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ডলার ক্রয় করে।


সবসময় কি টাকা ছাপিয়ে ডলার কিনে??


না। বছরে সর্বোচ্চ ২০/৩০(আনুমানিক) হাজার কোটি টাকা ছাপায়। কারণ অর্থনীতির আকার বৃদ্ধির ফলে বাজারে তরল টাকার চাহিদা বৃদ্ধি পায়। তাই ততটুকু পরিমাণে টাকা ছাপায়। এর বেশি টাকা ছাপানো হলে টাকার মান কমে যাবে। তবে  বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার কিনে ৩০/৪০ বিলিয়ন ডলারের প্রতি বছর।


 তাহলে এত টাকা কোথায় পায়?? 


আসলে বাংলাদেশ ব্যাংক শুধু ডলার ক্রয় করেনা। বিক্রিও করে। যখন আমরা বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করি তখন কিন্তু বিদেশে অর্থ পরিশোধ করতে হয়। তখন যিনি টাকা পরিশোধ করবেন তিনি বানিজ্যিক ব্যাংক এ গিয়ে টাকা জমা দেন। বানিজ্যিক ব্যাংক সেই টাকা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এর কাছে জমা দিয়ে ডলার নেয়। এবং সেই ডলার পণ্য বিক্রেতার একাউন্টে পাঠিয়ে দেয়। অথবা এভাবে বলা যায় বানিজ্যিক ব্যাংক সেই টাকাকে ডলারে রুপান্তরিত করে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট জমা দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংক সেটি পণ্য বিক্রেতার একাউন্টে পাঠিয়ে দেয়। এভাবে অতিরিক্ত ডলার গুলো আমদানির দায় পরিশোধে ব্যবহৃত হয়।


বাংলাদেশের রিজার্ভ এত বৃদ্ধি পাওয়ার কথা নয়। আজকে রিজার্ভ ৪৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। কারণ একই সাথে রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিদেশ থেকে প্রচুর রেমিটেন্স এসেছে। সেই তুলনায় আমরা পণ্য আমদানি করিনি। আমাদের রপ্তানির চেয়ে কিন্তু আমদানি অনেক বেশি। সেই হিসেবে আমাদের ডলার ঘাটতি থাকার কথা। কিন্তু প্রবাসীদের রেমিটেন্স আসার ফলে সেগুলো ব্যবহার করে আমদানি দায় মেটানো হয়। 


খুব সংক্ষেপে উদাহরণ হিসেবে আমাদের রপ্তানি ৩৫ ডলার কিন্তু আমদানি ৬০ ডলার। তাহলে ঘাটতি ২৫ ডলার। এই ২৫ ডলারের মধ্যে ২০ ডলার রেমিটেন্স আসতেছে। তবুও ঘাটতি ৫ ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি বছর ৩ ডলার ছাপে(সমপরিমাণ টাকা)। তবুও ঘাটতি ২ ডলার। প্রতি বছর বিদেশি বিনিয়োগ আসতেছে ৬ ডলার। এখন ঘাটতি কাটিয়ে উদ্বৃত্ব ৪ ডলার। এই ৪ ডলার করেই রিজার্ভ প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। 


অবশেষে একটি কথা। 

প্রবাসীদের রেমিটেন্স দেশের জন্য ভিক্ষা নয়। অনেকে এমনটাই মনে করতেছেন। অনেকে মনে করতেছেন এই টাকা বিভিন্ন সরকার দল চুরি করে। সেটাও ভিত্তিহীন। আপনার টাকা আপনার পরিবার পায়। আপনার রেমিটেন্স দিয়ে দেশের উপকার হচ্ছে। সেটা হলো ডলার আসায় সরকারের আমদানি দায় মেটানো সহজ হচ্ছে। নয়তো ডলারের ঘাটতি থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশি বেশি টাকা ছেপে সব ডলার ধরে রাখতো। ফলে জিম্বাবুয়ের মতো মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিতো।


©

বুধবার, ৫ মে, ২০২১

পানির নীচে একজন চ্যাম্পিয়নের অন্যরকমের যুদ্ধ "

 "পানির নীচে একজন চ্যাম্পিয়নের অন্যরকমের  যুদ্ধ  "



সাভারস কারাপেথিয়ান একজন আর্মেনিয়ান অলিম্পিক সাতারু চ্যাম্পিয়ান। ১৯৭৬ সালে ভাইয়ের সাথে বিশ কিলোমিটার দৌড় সবে মাত্র শেষ করেছেন। এমন সময় দেখেন  লম্বা একটা ট্রলি বাস   নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে  গভীর জলাধারে পতিত হয়েছে। 


সাভারস সাথে সাথে পানিতে ঝাপ দিয়ে প্রায় আশি ফুট নীচে  তলিয়ে যাওয়া বাসটির কাছে যান এবং  গভীর পানির নীচে জিরো ভিজিবিলিটি থাকা সত্ত্বেও ক্রমাগত পায়ের আঘাতে বাসের পেছনের জানালা ভাঙতে সক্ষম হন। সেই ভাঙ্গা জানালা দিয়ে একজনকে বের করে নিয়ে এসে তীরে পৌঁছান। আবার সাঁতরে গিয়ে আরেকজনকে বের করে নিয়ে আসেন। এভাবে  টানা সাড়ে পাঁচ ঘন্টা প্রচেষ্টায় প্রায় বিশ  জন মানুষের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হন।


অতিরিক্ত ঠান্ডায় আর একটানা পানির নীচে থাকার কারণে   নিউমোনিয়া, ফুসফুসের প্রদাহ, লাণ্জ ডেমেজ সহ শরীরে নানা জটিলতা তৈরি হয়। হাসপাতালে কাটাতে হয় একটানা ৪৫ দিন। সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরলেও তার অলিম্পিক জীবনের ইতি ঘটে। সাভারসের এতে কোনো আফসোস নেই। তিনি বলেন-  অলিম্পিক গোল্ডের চেয়ে বিশজন মানুষের জীবনের মূল্য অনেক বেশি।


একজন সাতারু অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করলো কি করলো না এটা কোনো বড় খবর না। কত সাতারু, কত ক্রিড়াবিদরাতো শুধু খেলার মাঠ থেকে না জীবন থেকেই হারিয়ে যায়। কে কার খবর রাখে। ফলে, সাভারসও ইতিহাস থেকে একেবারে নীরবেই হারিয়ে যান।  এরপর কেটে গেছে প্রায় ছয় বছর ।


সাভারস যে বিশজন মানুষের জীবন বাঁচিয়েছিলেন তাদেরই একজন রাশিয়ার বিখ্যাত প্রাভদা পত্রিকায় কাজে যোগ দিয়ে তার জীবন ফিরে পাওয়ার ঘটনাটি পত্রিকা অফিসে গল্পচ্ছলে শেয়ার করলে- পত্রিকার সম্পাদক এটা নিয়ে একটা ফিচার তৈরি করতে বলেন। ১৯৮২ সালের অক্টোবর মাসের ১২ তারিখ সেই ফিচারটি প্রকাশিত হয়। যার শিরোণাম ছিলো- The Underwater Battle of the Champion"   


সাভারসের নাম এবার রাশিয়া থেকে আর্মেনিয়ার ঘরে ঘরে পৌঁছে যায়। ছোট, বড়, যুবক, বৃদ্ধ নানা জনের কাছ থেকে প্রায় ৬০ হাজার চিঠি তাঁর কাছে আসে। 

সাভারস বলেন একেকটা চিঠি যেন অলিম্পিকের একেকটা গোল্ড মেডেলের চেয়েও মূল্যবান।  কিন্তু আমি গোল্ড মেডেলও চাইনি, মানুষের এমন ভালোবাসা পাবো তাও ভাবিনি। আমার সামনে কি ঘটবে বা না ঘটবে তাও চিন্তা করিনি।  শুধু চেয়েছি যেভাবেই হোক ডুবে যাওয়া মানুষগুলোর জীবন যেন বাঁচে। 


১৯৮৬ সালে তার বাড়ির পাশেই এক বিল্ডিং এ আগুনে ধরে। এবারও সেই রেসকিউয়ার সাভারস।  কেউ দমকল বাহিনীর অপেক্ষা করছে। কেউ ভিড় করে দূর থেকে দেখছে। অসুস্থ সাভারস দ্রুত আগুনে পোড়া বিল্ডিং এ প্রবেশ করেন এবং শরীরে সমস্ত শক্তি নিঃশেষ করে মাটিতে মুর্ছা না যাওয়া পর্যন্ত  ওয়ান ম্যান আর্মি হিসাবে তার উদ্ধার কাজ চালাতে থাকেন। আগুনে পোড়া শরীর নিয়ে তাকে আবারো হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। 


তাঁর  জীবন কাহিনী নিয়ে ২০১২  সালে তাঁর  তৈরি হয় ম্যুভি "সুইমার" । এক সত্যিকারের হিরো সাভারস কারাপেথিয়ান ৬৭ বছরে বয়সেও এখনো মানবতার সেবায় নিয়োজিত আছেন এবং গত সপ্তাহে জীবনে অর্জিত সমস্ত সম্পদ মানবতার সেবায় দান করে দিয়েছেন। 


ভাবছি যেখানে কোনো কোনো মানুষ  স্বার্থ ছাড়া আর কিছুই বুঝেনা। জীবনে যা পায় তা কব্জা করে নিতে চায়। সেখানে সাভারস কারাপেথিয়ানদের মতো মহান মানুষেরা আছে যারা জীবন এবং ধন দুটোই মানুষের জন্য বিলিয়ে দিয়ে যায় ।


এই মহান মানুষটি সম্পর্কে আমি আজই জানলাম আর ভাবলাম- এমন একজন মহৎ মানুষ সম্পর্কে জানা দরকার। তাই শেয়ার করলাম।


মানবতাবাদী হিরো সাভারস কারাপেথিয়ান আপনার জন্য হৃদয়ের গভীর থেকে শ্রদ্ধা।


- Arif Mahmud

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পৃথিবীর দিকে ফিরে আসছে চায়না রকেট

 চীনা মহাকাশ প্রকল্প ‘তিয়ানহে স্পেস স্টেশন’ এর জন্য পাঠানো একটি রকেটের ১০০ ফুট লম্বা মূল অভ্যন্তরীণ অংশের (কোর) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গেছে। অনিয়ন্ত্রিত গতিতে সেটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮০ কিলোমিটার উঁচুতে বায়ুমন্ডলে ছুটে চলেছে রকেটটির খন্ডাংশ।


কোথায় পড়তে পারে রকেটটি?


ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৮০ কিমি. উচ্চতায় রকেটটি ছুটে বেড়ালেও এর গতিপথ এলোমেলো নয়। তাই পৃথিবীর যে কোন স্থানেই পড়তে পারে এ তথ্য সঠিক নয়। বর্তমান গতিপথ অনুযায়ী, রকেটটির ছাই হয়ে যাওয়া অবশিষ্টাংশ সমুদ্র এবং সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। সেই সঙ্গে ন্যু-য়র্ক, মাদ্রিদ, বেইজিং, চিলি, ওয়েলিংটন, নিউজিল্যান্ডে ধ্বসে পড়ার কিছুটা সম্ভাবনা রয়েছে।


কতটুকু ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে?


চীনের বানানো এই বৃহত্তম রকেটটির নাম- লং মার্চ ৫বি রকেট। বায়ুমন্ডলে ছুটতে ছুটতে এর অধিকাংশ অংশই পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। রকেটের কিছু টুকরো হয়তো পৃথিবীতে এসে পড়বে। তাতে এটি ১০০ মাইল এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাওয়া একটি ছোট বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরী হতে পারে।


১৯৯০ সাল থেকে পৃথিবীতে যতগুলো রকেটের অনিয়ন্ত্রিত রি-এন্ট্রি ছিল তার সবই ১০ টনের কম। তবে লং মার্চ ৫বি রকেট এর অংশটির ওজন প্রায় ২১ টন বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি খুব একটা সুবিধাজনক নয় বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।


চীন এর আগেরবার যখন লং মার্চ ৫বি রকেট উৎক্ষেপণ করেছিল তখনও কিছু বড় লম্বা ধাতব অংশ পড়ে আইভরি কোস্টে বেশ কয়েকটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। যদিও বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সংঘর্ষে এর বেশিরভাগ অংশই জ্বলে গিয়েছিল। তবুও প্রচুর ধাতব টুকরো পৃথিবীতে এসে পড়েছিল। কিন্তু তখন কেউ হতাহত হয়নি। সম্প্রতি একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে।


#China #Roket


শনিবার, ১ মে, ২০২১

দোয়ার শক্তি;মৃত্যুদণ্ডের আদেশ প্রাপ্ত একজন কয়েদি আর তাঁর প্রার্থনাঃ

মৃত্যুদণ্ডের আদেশ প্রাপ্ত একজন কয়েদি আর তাঁর প্রার্থনাঃ 


খাবার দিতে গিয়ে দেখি উনি সেলের এক কোনে জায়নামাজে বসে আছেন। পায়ের শব্দে চোখ উপরে তোলেন। অশ্রুসজল চোখ। শান্ত স্বভাব। ধীর স্থির। 

মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত আসামীদের এই সেলে নিয়ে আসা হয়। 


আর আমার মতো যাদের হৃদয়  পাথরের মতো শক্ত- তাদেরকেই এই সেলে পাহারায় নিযুক্ত করা হয়। উনার বিরুদ্ধে মামলা খুবই শক্ত।


খুনের আসামী। নিম্ন আদালতে মৃত্যদণ্ডের আদেশ হয়েছে। এখন উচ্চ আদালতে রায় বহাল থাকলেই উনার ফাঁসি কার্যকর হবে।  


আসামীর প্রতি আমার আচরণ যত কঠোর। উনার আচরণ ঠিক ততোই কোমল। আমার সুদীর্ঘ ত্রিশ  বছরের কারারক্ষী জীবনে অনেক খুনিকে দেখেছি। খুনির চোখ দেখে চেনা যায়। কিন্তু উনার চোখ দুটো বড়ই নিষ্পাপ।


উনি আমাকে সালাম দেন। অশ্রুসজল চোখেও একটু স্মিথ হাসেন। আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়- এমন নরম স্বভাবের একজন মানুষ  এরকম ভয়ঙ্কর খুনি হতে পারে।


আমি সরাসরি জিজ্ঞাসা করি -খুনটা আপনি কেন করলেন?


তিনি  কোরআন শরীফ থেকে সুরা মায়েদার একটা আয়াত আরবিতে পাঠ করে বলেন-


নিরাপরাধ কোনো ব্যক্তিকে কেউ  হত্যা করলো-মানে সে যেন দুনিয়ার সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে হত্যা করল; আর কেউ কারও প্রাণ রক্ষা করলো মানে সে যেন পৃথিবীর সমগ্র মানবগোষ্ঠীর প্রাণ রক্ষা করল।


এরপর তিনি  বলেন- তিরমিজিতে একটা হাদিস আছে- ‘দুনিয়া ধ্বংস করে দেওয়ার চেয়েও আল্লাহর কাছে ঘৃণিত কাজ হলো মানুষ হত্যা করা।’ তাই মানুষ খুনের মতো এমন নৃশংস, জঘন্য অপরাধ আমি কেমন করে করতে পারি। উনার কন্ঠ ভারাক্রান্ত হয়।


জীবনের বায়ান্ন বছর বয়সে এই প্রথম বুঝতে পারি- আমার মতো পাথর হৃদয়ের মানুষের মনও নরম হয়। 

আচ্ছা- তাহলে এই খুনের মামলায় প্রধান আসামি হিসাবে আপনি জড়িয়ে পড়লেন কেমন করে?  


ঘটনা সত্য - একজন প্রভাবশালী মানুষ খুন হয়েছে এবং কাকতালীয়ভাবে এই খুনের ঘটনা থেকে আমি মাত্র কয়েক কদম দূরে ছিলাম। যারা খুন করেছে- তারা আরো প্রভাবশালী।


আর আমার মতো এক দূর্বল মানুষকে ফাঁসিয়ে দিয়ে ওরা বেঁচে গেছে আর নিয়তি আমাকে এই নির্জন সেলে নিয়ে এসেছে।


আপনার আত্মীয় স্বজনরা কোনো চেষ্টা করেনি।উকিলরা আপনার পক্ষে দাঁড়ায়নি।ওরা যে যেভাবে পারে চেষ্টা করছে। আমাকে বাঁচাতে একটুকরো ভিটে ছিলো- সেটা বিক্রি হয়েছে।


বউ ছোট দুই সন্তান নিয়ে গৃহহীন হয়েছে। বৃদ্ধা মা আগে থেকেও কম দেখতেন। আমার জন্য কাঁদতে কাঁদতে বৃদ্ধ মায়ের চোখ দুটো এখন আর আলো দেখে না। 


কিন্তু বিচার, কোর্ট, আদালত, সমাজ, সংবাদ  এসবতো আমার মতো দূর্বলের পক্ষে না। তাই, আমার যত দ্রুত ফাঁসি হবে- ওরা সবাই তত দ্রুত বেঁচে যাবে। কিন্তু আমি জানি আমি নির্দোষ। তাই উচ্চ আদালতে আমি পিটিশন দায়ের করেছি।


আমার উচ্চ আদালত হলো- আমার আল্লাহ। উনি সবচেয়ে উত্তম পরিকল্পনাকারী। আমার নিয়তিতে যদি ফাঁসি লেখা থাকে সেটা হবে।


আর যদি আমার মুক্তি লেখা থাকে তবে সেটাও হবে। আমার জীবন মৃত্যুর মালিক একমাত্র আল্লাহ। সবকিছুই আমি আমার রবের উপর ছেড়ে দিয়েছি। 


পরদিন উনার স্ত্রী দুই পুত্র সহ উনার মাকে নিয়ে দেখা করতে আসেন। সবাই অনবরত কাঁদছে। বৃদ্ধা মায়ের হাত দুটো ছেলের মুখের উপর হাতড়ে বেড়াচ্ছে।


মা ছেলের মুখে, ঠোঁটে, গালে, মাথায় চুমু খাচ্ছেন। পিতা চুমু দিচ্ছে তার নিষ্পাপ দুটো সন্তানের মুখে। সুদীর্ঘ সময়ের কারারক্ষী জীবনে এই প্রথম আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ে। বুকের ভিতরটা মোচড়ে ওঠে।


তিনি মাকে বলেন- মা পিটিশনতো দিয়ে রেখেছি। উচ্চ আদালতে। আল্লাহর আরশে। এই যে আমার মুখের সাথে তোমার লেগে থাকা হাত দুটো যত কাছে।


উনি তার চেয়েও কাছে মা। উনি খুব কাছে। উনি সব দেখছেন মা। কোনো কিছুই তার পরিকল্পনার বাইরে না। আমি আমার দুটো অবুঝ সন্তানের মতো নির্দোষ আর নিষ্পাপ মা। 


আল্লাহর উপর বিশ্বাস আমি অনেক পড়েছি, অনেক গল্প শুনেছি। কিন্তু এমন দৃঢ় বিশ্বাস জীবনে এই প্রথম দেখলাম। কয়েকদিন কেটে গেলো।


যখনই খাবার দিতে যাই। দেখি উনি জায়নামাজে আছেন। অথবা সিজদায় পড়ে রয়েছেন। হাইকোর্টে চূড়ান্ত রায় নিষ্পত্তির আগে এক বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে।


যে লোক এই নিরাপরাধ মানুষটিকে খুনের মামলায় জড়িয়েছিলো- তার গাড়ী এক মারাত্মক দূর্ঘটনায় পড়ে। ঘটনাস্থলেই স্ত্রী, পুত্র মারা যায়। অজ্ঞান অবস্থায় দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়।


কয়েক ঘন্টা পর তার জ্ঞান ফিরে আসলে সে জানতে পারে- দুর্ঘটনায় তার স্ত্রী-পুত্র মারা গেছে। এটা শুনার পর তার অবস্থায় আরো অবনতি ঘটে। সে বুঝতে পারে- জীবনের সব কিছু দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।


ধন, দৌলত, ঘর বাড়ি, ক্ষমতা কোনো কিছুই তার আর কাজে লাগবেনা। যে কোনো সময় সে মারা যাবে। তাই, নিজে খুন করে আরেকজনকে খুনের মামলায় ফাঁসিয়ে সে আল্লাহর কাছে এতো বড় পাপ নিয়ে যাবে কেমন করে।


সেখানেতো আর কোনো কোর্ট, হাইকোর্ট নেই। হয়তো বা জীবনে সে এমন কোনো কল্যাণ করেছে যার জন্য  আল্লাহ তাকে একটা শেষ সুযোগ করে দিয়েছেন।


মৃত্যু শয্যায় শুয়ে সে চীৎকার করে বলতে থাকে - সব মিথ্যা, সব মিথ্যা। সত্য হলো- আব্দুল বাতিন নির্দোষ। আর আমিই সেই খুনি। 


কোর্টে আব্দুল বাতিনকে বেখুসুর খালাস দেয়া হয়। কোর্টে দাঁড়িয়ে বুঝলাম- যারা নির্দোষ আর যারা গভীরভাবে আল্লাহকে বিশ্বাস করে- আল্লাহ তাদের এভাবেই রক্ষা করেন।


উনাকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে আমি বলি, কারারক্ষি হিসাবে আমার চাকরিরও  শেষ দিন গনিয়ে আসছে।  আমাকে আপনি এমন কিছু বলুন যা আমি সারাজীবন মনে রাখতে পারি। উনার কথাগুলো হুবুহু নীচে তোলে ধরলামঃ


আল্লাহর চেয়ে আপনজন আর কেউ নেই। জীবনের কঠোর সংকটময় দুঃসময়ে শুধু না যে কোনো সময় তার কাছে চান এবং হৃদয় দিয়ে বিশ্বাস করুন -তিনি আপনার ডাক শুনছেন।


আল্লাহ শুধু একটা নাম বা ইমাজিনারি সত্তা না।  তিনি এক জীবন্ত বাস্তবতা। ঘাড়ের শিরার চেয়ে তিনি মানুষের সন্নিকটে।


আর, আল্লাহ এমন ভাবে মানুষকে সাহায্য করেন পৃথিবীর কোনো উইসডম দিয়ে তার ব্যাখ্যা করা সম্ভব না।  


আব্দুল বাতিন দু হাতে তার দু সন্তানকে ধরে হাঁটেন। পিছনে স্ত্রী আর মা। আমি বিস্ময়ভরা চোখে যেন আল্লাহর এক অলৌকিক নিদর্শন দেখি।


খার্তুম কোর্টে (সুদান) সেদিন আমি শুধু  আব্দুল বাতিনের ঈমান দেখিনি। আমি শুধু  তাঁর দোয়ার শক্তি দেখিনি। 


একজন নিরাপরাধ মানুষের অলৌকিক মুক্তি দেখিনি।   এই দিন আমি নতুন করে মুসলমান হয়েছি। এই দিন  আমি আমার আল্লাহকে খুঁজে পেয়েছি। 




আলোচিত সমালোচিত রেবেকা শাফীঃ

 রেবেকা শাফী!

অনেকে ফেসবুকে নিম্মের ছবিটির মেয়ের বিতর্ক দেখে থাকবেন।চলুন তার অর্জন গুলো একটু দেখে  আসি-


✔ Physics Undergrad (GPA 4.00) - Cal Tech

✔ Master’s Astrophysics - Harvard

✔ PhD – Harvard (On Black hole Spin!)

✔ Teaching Assistant, Post Doc RA, Swartz Fellow in Comp Neuroscience – Harvard Center of Brain Science

✔ Post Doc Fellow – Broad Inst at MIT and Harvard

✔ Post Doc Fellow – Harvard Med School

✔ Winner of US$ 200,000 grant to study “Measure of Black hole Spin”

✔ Best TV Debater – Bangladesh Television (I just saw her debate in a video, one of the best!) 


ইনি আগে Physics নিয়ে পড়তেন, এখন তার interest হচ্ছে Biology! কাজ করছেন neuroscience আর genetics এর intersection নিয়ে Harvard Medical School এ!

আর আমাদের বর্তমান প্রজন্মকে একটু দেখে আসি চলেন-

আমাদের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে উন্নতি লাভ করা মানে ইয়ো ইয়ো টাইপের হওয়া-

আমাদের বর্তমান প্রজন্মের একটা ধারণা হলো আপনি তখনি সমাজে টিক থাকতে পারবেন যখন আপনি আপনার বাকি ফ্রেন্ডের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারবেন।

এদের কাছে জীবন মানে ফেসবুকে দিনে ডজন খানিক সেফলি দেওয়া-

এদের কাছে জীবব  মানে তথাকথিত ভাইয়াকে আইডল মানা-

এদের কাছে জীবন মানে ইশ যদি সালমান মুক্তাদিকের সাথে একটা সেলফি তুলতে পারতাম-

এদের কাছে জীবন মানে ব্যান্ডের গানে নাচ করা-

এদের কাছে জীবন মানে বই কিনে সেটার পাশে একটা কফির কাপ রেখে ছবি তুলা-

এদের কাছে জীবন মানে ইউটিউব এ সাবস্ক্রাইবার আর্ন করা-

পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাই একজন পাকিস্তানি শিক্ষা আন্দোলনকর্মী, যিনি সবচেয়ে কম বয়সে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন।

.

এই মালালা  যে মেয়েদের পক্ষে কথা বলায়,মেয়েদের শিক্ষার পক্ষে কথা বলায় ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ৯ অক্টোবর, স্কুলের বাসে একজন বন্দুকধারী তাকে চিহ্নিত করে তিনটি গুলি করে, যার মধ্যে একটি তার কপালের বাঁ দিক দিয়ে ঢুকে চামড়ার তলা দিয়ে তার মুখমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে কাঁধে প্রবেশ করে।

.

একজন অদম্য সাহসী নারী এই মালালা ইউসুফজাই।

তার এই সাহস তার এই কর্ম তাকে এনে দিয়েছে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার। তাছাড়া তিনি তার আরো কিছু অর্জন-

শাখারভ পুরস্কার

সাইমন দে বোভেয়ার পুরস্কার

সাম্মানিক কানাডীয় নাগরিকত্ব

জাতীয় যুব শান্তি পুরস্কার

.

আর আমাদের মেয়েরা কি করছে? ফেসবুক,ইউটিউব, টুইটার।একটু ঘুরলাম,খেলাম এইতো জীবন।

আফসোস, জীবনটাকে তারা এখনো বুঝতে শিখেনি।

জীবনের আসল অধ্যায়টা তারা কখনো দেখেনি।

জীবনে বেঁচে থাকার জন্য পৃথিবীতে কত কত মেয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছে তা তারা জানেনা।

তারা শুধু জানে প্রতিদিন একটা সেলফি তুলতেই হবে,বিয়ের পর জামাইয়ের সাথে প্রতিদিন ৫ টা ছবি তুলে ফেসবুকে দিতেই হবে।

ফেসবুক সেলিব্রিটির পেজে গিয়ে একটা কমেন্ট করতেই হবে-

এখন প্রতিটি ইউনিভার্সিটিতে দেখা যায় বছরে ৪/৫ টা ব্যান্ড আসে।গান হয় নাচ হয়,আর সাথে ছেলে মেয়েরা সুর মিলিয়ে নাচে।

তাদের কাছে জীবনটা এইটুকুতে সীমাবদ্ধ। 

কিন্তু জীবনের প্রকৃত অধ্যায় তারা কখনো খোজার চেষ্টা করছেনা-

জীবনে যেদিন বুঝতে পারবেন হায় আমি কি করলাম আমাদের ৪০/৫০ বছরের জীবনে।আমাকে কে মনে রাখবে।আমাকে আমার কোন কর্মের জন্য মনে রাখবে।

আমি এই দেশ এই পৃথিবীকে কি দিয়ে গেলাম?

সব কিছুর উত্তর হিসেবে যখন শুধুমাত্র একটা হতাশা পাবেন তখন বুঝবেন আপনি জীবনকে ব্যবহার করেছেন নিজের স্বার্থে শুধু।কারো একটা ভেঙে পরা জীবন,হারতে বসা কারো কাধে হাত রেখে সাহস দেওয়া-

পারবনা বলা মানুষটির কাছে গিয়ে তোমাকে পারতে হবে বলা আর হতাশায় ডুবে থাকা মানুষটির কাছে গিয়ে বলা আমিতো আছি - এইতো জীবন।

আমাদের উপহার দেওয়া এই জীবনটাকে একটু ভালোভাবে, ভালোকাজে ব্যবহার করুন।

ভালোবাসুন সকল অসহায়কে,প্রতিবাদ করুন সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে। 

জীবনটাকে জীবনের মতো করে বাঁচতে দিন।💙



একে কি বলে একাকিত্ব নাকি স্বাধীনতা!?

 যখন সকালে ঘুম ভাংগানোর কেউ নেই, রাতে বাড়ি ফিরলে অপেক্ষায় কেউ বসে নেই, তুমি যা মন চায় করতে পারো, কোনো পিছুটান নেই.... একে কি বলে একাকীত্ব না...