বাবরি মসজিদে প্রথম হামলাকারীর গল্প
১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়। মসজিদে প্রথম হামলাকীরর নাম হলো বলবীর সিং।
বলবীর সিংয়ের জন্ম ভারতের হারিয়ানার পানিপথে। পানিপথ ছিলো উগ্র হিন্দুত্ববাদী মানুষদের দিয়ে পূর্ণ। তার নিজের ভাষায়-
“কলেজে পড়ার সময়ই আমার সাথে অনেক উগ্রবাদী ছাত্রের সাথে পরিচয় হয়। তারা আমার মনে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা আর হিংসার বিষবাষ্প ঢুকিয়ে দিয়েছিলো”।
এভাবে ছাত্রাবস্থায়ই তিনি জড়িয়ে পড়েন উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল শিবসেনার সাথে। শিবসেনার যে দলটা বাবরি মসজিদ ধ্বংস করেছিলো বলবীর সিং ছিলেন সে দলের প্রধান। মসজিদ ভাঙার স্মৃতি নিয়ে তিনি বলছেন-
“ আমি তীব্র বেগে আমার কুঠার দিয়ে মসজিদের গম্বুজে আঘাত করলাম। আকাশ বিদীর্ণ করে আওয়াজ তুললাম ‘ভগবান রামের জয়”।
এরপর সবাই বলবীরের নামে জয়োধ্বনি দেয়া শুরু করে। রাতারাতি তিনি বিখ্যাত হয়ে যান।কিন্তু তার আদর্শবান পিতা তাকে ত্যাজ্য করেছিলেন। তার পিতা এজন্য নিজের শেষকৃত্য মুসলিমদের রীতিতে করাতে বলেছিলেন।
মসজিদ গুড়িয়ে দেয়ার কিছুদিনের মধ্যেই একটা ঘটনা ঘটলো। বলবীরের এক সাথি যোগেন্দ্র বাবরি মসজিদের ভাঙা দুটো ইট এনে তাতে সবাইকে প্রস্রাব করতে বলে! এমনটা করার কয়েকদিনের মাথায় দেখা যায় যোগেন্দ্র বদ্ধ উন্মাদের মতো আচরণ করতে শুরু করে। একেবারে উলঙ্গ হয়ে যায়। এমনকি তার নিজের মা কে পর্যন্ত ধর্ষণের চেষ্টা করে!
কিছুতেই কিছু করতে না পেরে যোগেন্দ্রের পরিবার এক ইমামের কাছে গেলে ইমাম তাদের জন্য দুয়া করেন এবং তাদের ইসলামের দাওয়াত দেন। তারা ইসলাম কবুলও করেন। আশ্চর্যজনকভাবে, খুব দ্রুতই যোগেন্দ্র সেরে উঠে।
এই ঘটনার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বলবীর সিং ও তার পরিবার অনেক চিন্তাভাবনা করে নিজেরাও ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়।
এবার শুনুন তারা এখন কি করছে, তাদের মুখেই-
“ আমাদের লক্ষ্য অন্তত ১০০ মসজিদ সংস্কার ও নতুন করে ১০০ মসজিদ নির্মাণ করা। …প্রতিবছর ৬ ডিসেম্বর আমরা অন্তত একটা মসজিদ সংস্কার ও নির্মাণ করি। এই সেই দিন, যেদিন বাবরি মসজিদ আমরা নিজ হাতে ভেঙেছিলাম”।
আল্লাহ যাকে হিদায়াত দেন তাকে গোমরাহ করে কে?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন