অর্থাৎ শিক্ষাকাঠামোর ভেতর দিয়ে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত পৌছানোর প্রশ্নটা অবিভাবকের আর্থিক সঙ্গতির সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ধনীর আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গরীবের, বা আরও ভালো করে ঘাটলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গরিবের- বিষয়টা মোটেও এমন না। ধনীরাই সবধরণের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিংহভাগ আসন দখল করে থাকতেছেন। প্রাইভেট, পাব্লিক, বিশ্ববিদ্যালয়,কলেজ- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ধরণ নির্বিশেষে।
এর মানে, অর্থনৈতিক অসমতার সাথে রাষ্ট্রীয় শিক্ষাকাঠামো মিলে এখানে এমন একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে, যে উচ্চশিক্ষার দুয়ার গরিবের জন্য কার্যত খোলাই নাই।মধ্যবিত্তের জন্য সামান্য পরিমাণে আছে, যেইটা আবার মধ্যবিত্তরে ফতুর বানাবারও একটা মাধ্যম।
কিভাবে তৈরি হইলো এই বাস্তবতা?
আপনি সরকারী কলেজে স্কুলে পড়ান নাকি প্রাইভেট স্কুলে কলেজে পড়ান সেইটা বিষয়ই না এইখানে- একেবারে প্রথম থেকেই আপনাকে শিক্ষা কিনতে পারতে হবে। মানসম্মত, সাফিশিয়েন্ট শিক্ষা।যেই শিক্ষা না কিনতে পারলে আপনার সন্তান উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত যেতেই পারবেনা।
এই শিক্ষা আপনার কাছে বিক্রি করে কোচিং সেন্টারগুলি। এই শিক্ষা কনসেন্ট্রেটেড শহরগুলির নামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছেলেমেয়েদের থেকে কিনতে হবে আপনার। মাসে অন্তত ১০ হাজার টাকা সন্তানের পড়ালেখার পিছনে খরচ করতে পারেন না, তার পিছনে চব্বিশ ঘন্টা মা অথবা বাবা লেগে থাকতে পারেন না- এমন অবিভাবকের পক্ষে উচ্চশিক্ষায় সন্তানকে পৌছানোর কল্পনা করাটাই কঠিন।
আরেকটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা হইলো,মধ্য আয়ের পরিবারগুলি প্রাইভেট উচ্চশিক্ষা ক্রয়ের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠতেছেন।
এবার ভাবেন, কী করবেন। এই ধনীর ঘরের ছেলেমেয়েরা এমন একটা কমিউনিটির, যারা মোট জনসংখ্যার সংখ্যালঘুতম অংশ। আর গরীবের ঘরের ছেলেমেয়েরা মোট জনসংখ্যার ওভারহোয়েল্মিং মেজরিটি। অথচ উচ্চশিক্ষায় এই সংখ্যালঘু ধনীরাই অবিশ্বাস্য রকমের বেশী প্রবেশাধিকার পাচ্ছেন, সংখ্যাগুরু গরিবেরা অবিশ্বাস্যভাবে কম প্রবেশাধিকার পাচ্ছেন উচ্চশিক্ষায়।
ফলে করণীয় খুব পরিষ্কার।সংখ্যাগুরু গরিব জনগণের উচ্চশিক্ষায় প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হলে সবার আগে সংখ্যাগুরু গরিবের ক্ষমতায় আসীন হইতে হবে। খেলা সিম্পল।
শ্রমিক এর গ্রাফিক্স।
- ফারুক সাদিক
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন