বুধবার, ৭ এপ্রিল, ২০২১

নতুন জীবনে আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পাওয়া এক নায়কের গল্প

জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বছর কারারুদ্ধ বা যেকোনো আটকে পড়ে গেলে সেখান থেকে বের হয়ে আবার আগের জীবনে ফিরতে পারাটা অনেক কঠিন একটা ব্যাপার। আপনার পিক টাইমটা আবার তৈরি করতে পারলে আপনি ব্যক্তিজীবনে সফল এতে কোনো দ্বিধা নেই৷ কিন্তু কেউ যদি আগের অবস্থানকে পিষে ফেলে নতুন জীবনে আকাশচুম্বী সাফল্য পেয়ে যান তবে সে ব্যতিক্রম, সে সবার কাছে উদাহরণ। রবার্ট ডাউনি জুনিয়র এমন একটা নাম। ❤


   *Robert Downey Jr. 


নিউ ইয়র্কের ম্যানহাউটনে ৪ এপ্রিল,১৯৬৫ সালে জন্মান ডাউনি জুনিয়র। জন্ম ফিল্ম পাড়ার এক পরিবারে, বাবা অভিনেতা-পরিচালক, মা অভিনেত্রী। তাই খুব সহজেই ডাউনির ক্যারিয়ার গড়ে উঠার কথা। বাবার কল্যাণে কাজ করেছেনও শিশু চরিত্রে। কিন্তু ডাউনির কপালে শৈশবের শুভ্রতা ছিলোনা। বাবা চরম পর্যায়ের মাদকাসক্ত। মাত্র ছয় বছর বয়স থেকে ডাউনি চিনেছেন মাদক কি জিনিস, মাদকাসক্ত হওয়া মাত্র ৬ বছরে!


 ডাউনির সাফল্য যেহেতু অনেক তাই তার একসময়ের অন্ধকার দিকগুলো খুব ভালো ভাবে জানা দরকার। কারণ একটা পতিত আত্মাকে স্বাভাবিক জীবনে আনতে ডাউনি দারুণ উদাহরণ। 

 সাত বছর থেকে অভিনয় শুরু। কিন্তু এরপর বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ দেখা ডাউনি বেশ দিশেহারা হয়ে পড়েন। প্রথমে বাবার কাছে থাকা ডাউনি আবার চলে যান মায়ের কাছে। পিতা-মাতার সম্মিলিত স্নেহ জিনিসটা বেচারা আর পেলোনা। অধপতন ঘটতেও সময় লাগেনি তার।


 ৯৬ থেকে মাদকের ব্যবহার এতো বেশি শুরু করছিলেন যে জেল হয়ে পড়েছিলো তার ঘর। নগ্ন হয়ে গাড়ি চালানো, অন্যের বাসাকে নিজের ভেবে ঘুমিয়ে পড়া ছিলো ডাউনির কাজ!  কিন্তু এটা তার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ সময় ছিলো কারন সে তখন হলিউডে লিড় এক্টর হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করে দিয়েছিলেন। করে ফেলছিলেন চ্যাপলিনের মতো চ্যালেঞ্জিং মুভি। কিন্তু ৯৬ থেকে ২০০৩, সাতটা বছর জেলখানাকে ঘর বানিয়ে ডাউনি তখন নিজের ছায়াও হারিয়ে ফেলছিলেন। 


দ্বিতীয় অধ্যায়টা চমকপ্রদ। ডাউনি তখন ধীরে ধীরে মাদক থেকে সরে আসার চেষ্টা করছেন। ২০০৩ এ সফল হন ডাউনি। মাদক থেকে সরে আসেন। কিন্তু ততদিনে নিজের ক্যারিয়ারের দফারফা করে ফেলছেন। এরপরেও মনোযোগী হন আবার অভিনয়ে। মূলত তার ফেরা ২০০৮ এ আইকনিক আয়রন ম্যান চরিত্রে। অল্প স্যালারিতে কাজ করা ডাউনির এ মুভি তখন বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছিলো। ডাউনির অভিনয়ের ভূয়সী প্রশংসা হয়। অস্কারের দৌড়েও ছিলেন, যদিও হেরে যান হিথ লেজারের কাছে কিন্তু জিতে যান মাদক নামক থাবা থেকে। 


 আয়রনম্যানের পর গাই রিচির শার্লক হোমস চরিত্রে আবার সাড়া ফেলে দেন ডাউনি। আমার কাছে এ চরিত্রেই তাকে বেস্ট লাগে। কি দারুণ এক্সপ্রেশন। স্বয়ং শার্লক হোমসকে হেঁটে যেতে দেখেছি, মনে হলো ডাউনি ছদ্মনাম আসলে সেই হোমস। 😅

হয়ে ওঠেন মার্ভেলের অভিচ্ছেদ্য অংশ। আয়রনম্যান চরিত্রকে নিয়ে যান সুপারহিরো মুভি ক্যারেক্টরের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় চরিত্রে। গায়ের সাথে লাগিয়ে নেন সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া তারকায়। এভেঞ্জারস এন্ডগেমে তিনি এযাবৎকালের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নিয়েছেন!


 তাহলে রবার্ট ডাউনির জীবন শিক্ষা দেয় মাদকের থাবা থাকাকালীন জীবন এবং এর থেকে মুক্ত জীবনের ব্যবধান। যেখানে মাদক সব দিক থেকেই গ্রাস করে ফেলে, সেখানে এর থেকে দূরে থাকলে কতো ভালো প্রভাব পড়ে তার দৃষ্টান্তের জন্য আর কাউকে বেছে নিতে হয়না। রবার্ট ডাউনি স্বয়ং একটা মেসেজ।


যাই হোক,তার অভিনয় দক্ষতা নিয়ে কখনো প্রশ্ন তোলার উপায় নেই। আমি তো স্বয়ং তাকে এখনো হোমস বলেই জানি৷ এখন তার সবচেয়ে সুন্দর ৫ কাজ সাজালে আমি যেসব সাজাবো:


1. Playing Sherlock Holmes's role (Both)

2. Chaplin

3. Iron man (2008)

4. Avengers: Infinity war 

5. Avengers: Endgame


যদিও অভিনয় দক্ষতা ট্রপিক থান্ডার,দ্য জাজ বা জোডিয়াক সবকিছুতেই দেখা যায়৷ আর শার্লক হোমস ভক্তদের জন্য সুখবর, ফিরছেন রবার্ট ডাউনি এ চরিত্রে। আবারও গাই রিচির ডিরেকশন। 👌


রবার্ট ডাউনি জুনিয়র আমার পছন্দের তারকাদের মধ্যে একেবারে প্রথম সারির একজন। যেভাবে বারবার হোঁচট খেয়েও ফিরে এসেছেন তিনি তার জন্য পৃথিবীজুড়ে অসংখ্য মানুষের অনুপ্রেরণা তিনি।

প্রিয় অভিনেতার আরও গুণমুগ্ধ কাজ দেখতে অবশ্যই মুখিয়ে আছি। তবে তার সাথে এটাও চাই ব্যক্তিজীবনে সাচ্ছন্দ্যে থাকুন তিনি।


 জন্মদিনের কিছুদিন পরে খেয়াল হলো 😥

   বি হ্যাপি, ক্লেভার ম্যান। ❤


কোন মন্তব্য নেই:

একে কি বলে একাকিত্ব নাকি স্বাধীনতা!?

 যখন সকালে ঘুম ভাংগানোর কেউ নেই, রাতে বাড়ি ফিরলে অপেক্ষায় কেউ বসে নেই, তুমি যা মন চায় করতে পারো, কোনো পিছুটান নেই.... একে কি বলে একাকীত্ব না...